রাসেল ভাইপার সাপ: বিস্তার, বিপদ এবং প্রতিকার

রাসেল ভাইপার সাপ

রাসেল ভাইপার সাপ, বৈজ্ঞানিক নাম Daboia russelii, দক্ষিণ এশিয়ার একটি অন্যতম ভয়ঙ্কর বিষধর সাপ। এটি প্রধানত ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, থাইল্যান্ড, মায়ানমার, এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য অঞ্চলে দেখা যায়। এই সাপের কামড়ে গুরুতর বিষক্রিয়া হতে পারে যা মানুষের জন্য মারাত্মক।

রাসেল ভাইপার সাপের বৈশিষ্ট্য

রাসেল ভাইপার সাপ সাধারণত বাদামী বা ফিকে হলুদ রঙের হয়, শরীরের ওপর গোলাকার ছোপ ছোপ দাগ থাকে যা অন্যান্য সাপ থেকে আলাদা করে চিনতে সাহায্য করে। এদের দৈর্ঘ্য ৪-৫ ফুট পর্যন্ত হতে পারে।

 রাসেল ভাইপার কামড়ালে কী হয়?

রাসেল ভাইপারের কামড় খুবই বিপজ্জনক এবং দ্রুত চিকিৎসা না করলে প্রাণঘাতী হতে পারে। এর কামড়ের উপসর্গগুলো নিম্নরূপ:

  •  তীব্র ব্যথা: কামড়ের জায়গায় প্রচণ্ড ব্যথা এবং ফোলা দেখা দেয়।
  • রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা: রাসেল ভাইপারের বিষ রক্তের জমাট বাঁধার প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটায়, যার ফলে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হতে পারে।
  • বমি ও ক্ষুধামন্দা: বিষক্রিয়ার প্রভাবে বমি ও খেতে অরুচি দেখা দিতে পারে।
  • কিডনির সমস্যার ঝুঁকি: রাসেল ভাইপারের বিষ কিডনিতে সমস্যা তৈরি করে, যার কারণে কিডনি বিকল পর্যন্ত হতে পারে।
  • শ্বাসকষ্ট: বিষ শরীরে দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে শ্বাস নিতে অসুবিধা দেখা দেয় যা মারাত্মক হতে পারে।

রাসেল ভাইপার সাপের উপদ্রুত অঞ্চল

রাসেল ভাইপার সাপ খোলা মাঠ, গাছের নিচে, পাথরের আশেপাশে কিংবা কৃষি জমিতে থাকার প্রবণতা রাখে। এগুলো সাধারণত গরমের সময় সক্রিয় থাকে, তাই এই সময়ে সচেতন থাকা জরুরি।

রাসেল ভাইপারের কামড় থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়

  1. জুতো ব্যবহার করুন: কৃষি জমি বা মাঠে কাজ করার সময় খালি পায়ে না হাঁটা উচিত।
  2. সতর্কতা অবলম্বন করুন: সাপের বাসস্থান হিসেবে পরিচিত অঞ্চলগুলোতে সন্ধ্যা ও সকালে সতর্কতা অবলম্বন করা
  3. শিক্ষিত থাকুন: রাসেল ভাইপারের বিষক্রিয়ার উপসর্গ সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং দ্রুত চিকিৎসা করানো।

রাসেল ভাইপার কামড়ানোর ক্ষেত্রে করণীয়

রাসেল ভাইপার সাপের কামড়ে দ্রুত হাসপাতালে যাওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বিষপ্রতিরোধী ওষুধ প্রয়োগ এবং সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে প্রাণ রক্ষা সম্ভব।

উপসংহার

রাসেল ভাইপার সাপ দক্ষিণ এশিয়ার পরিবেশে একটি সাধারণ কিন্তু ভয়ঙ্কর বিষধর সাপ। সচেতনতা এবং সতর্কতা অবলম্বন করে, আমরা এই সাপের ঝুঁকি থেকে নিরাপদ থাকতে পারি এবং প্রয়োজনে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে জীবন রক্ষা করতে পারি।

photo source- freepik.com

আরও দেখুন ⇓⇓⇓

আরও গুরত্তপূর্ণ তথ্য পেতে আমাদের সাথে যুক্ত হন